শরীয়তপুরে বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছে। সরকার পতনের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ায় রমরমা বাণিজ্যে মাদক কারবারিরা। বিভিন্ন এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের নামে থানায় একাধিক মামলা থাকলেও জামিনে বের হয়ে আবারো জড়িয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়।
এসকল ব্যবসায়ীরা কোনো এক অদৃশ্য শক্তিবলে ছাড় পেয়ে যাওয়ায় কোনোমতেই দমানো যাচ্ছে না এই মাদক ব্যবসায়ীদের। এ সকল অপরাধীরা এলাকার স্থানীয় যুবকদের জন্য এক মূর্তিমান আতঙ্ক। স্থানীয়দের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে শরীয়তপুর জেলাকে মাদক মুক্ত ঘোষণা করা হোক।
শরীয়তপুরের বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ী
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ আগস্ট ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরচান্দা খাসমহল বাজার এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আক্তার গাজীকে আটক করেন স্থানীয়রা। এসময় স্থানীয়দের তোপের মুখে এলাকার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের নাম জানা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার মাদক সিন্ডিকেট সবচেয়ে বেশি সক্রিয় জহির হাওলাদার, ফাইজুল হাওলাদার, দ্বীন ইসলাম হাওলাদার, মনসুর মোল্লা, নাঈম মিয়া, কাঞ্চন বেপারী, রেজা ইসলামসহ বেশ কয়েকজন। এদের মধ্যে জহির হাওলাদার রংপুর বিভাগের সাবেক কমিশনার জাকির হাওলাদারের ছোট ভাই।

যদিও স্থানীয়রা মাদক কারবারীদের মধ্যে মনসুর মোল্লা ও নাঈম মিয়াকে হাতেনাতে আটক করে তাদের কাছ থেকে ২৭ পিস ইয়াবা ও ২০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে। কিন্তু আসামিদের পুলিশে না দিয়ে উদ্ধারকৃত মাদক আগুনে পুড়িয়ে জড়িত ২ মাদক ব্যবসায়ীকে গণধোলাই দেওয়া হয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী প্রভাব বিস্তার করে রমরমা মাদক ব্যবসা করে আসছেন। এর মধ্যে একজনকে এলাকাবাসী ধরলে বেশ কয়েকজনের নাম সে বলে। পরে সেই নাম অনুযায়ী ২ জনের কাছ থেকে মাদক উদ্ধার হয়। তবে এরা অধিকাংশই প্রভাবিত হওয়ার তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। এলাকাবাসীর দাবি দ্রুত এলাকায় এই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে এলাকার যুব সমাজকে রক্ষা করা হোক।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ফাইজুল হাওলাদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মাদক মামলা নেই। যারাই অভিযোগ করেছে এগুলো শত্রুতার বসে করেছে। তবে স্থানীয়দের সঙ্গে পূর্বের মাদক সংক্রান্ত ঘটনার বিষয়ে তিনি মুখ খুলতে রাজি হননি। জহির হাওলাদার বলেন, আমি আমার ভাইয়ের প্রভাব কোথাও খাটাইনি। তাছাড়া আমি মাদক ব্যবসা কিংবা সেবনও করি না। চাইলে আপনারা তদন্ত করে দেখতে পারেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সখিপুর থানার সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, চরচান্দা এলাকার জহির হাওলাদারের ছত্রছায়ায় অনেকেই মাদক ব্যবসা করতেন, এই বিষয় অনেক অভিযোগ পেতাম। তবে তার ভাই একজন সচিব হওয়ার সেই প্রভাবের কারণে আমাদের কিছু করার ছিলো না। ওনি এলাকার সকল মামলার বিষয়ে তদবির করতেন। আগে তার চাচাতো ভাই ফাইজুল হাওলাদারকে মাদকসহ ডিবি পুলিশ আটক করেছিলো।

সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক বলেন, আমরা মাদকের বিষয়ে সোচ্চার আছি। কেউ যদি থানায় অভিযোগ করে কিংবা কোনো মাধ্যমে জানতে পারি, তাদের কাছে মাদক পাওয়া গেলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আরও দেখুনঃ