আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় শরীয়তপুর জেলার বিখ্যাত খাবার, শরীয়তপুর জেলা বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত ।
শরীয়তপুর জেলা সর্ম্পকে কিছু তথ্যঃ-
শরীয়তপুর জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের (প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগের) একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। শরীয়তপুর জেলার আয়তন ১১৮১.৫৩ বর্গকিলোমিটার। এই জেলার উত্তরে মুন্সীগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে বরিশাল জেলা, পূর্বে চাঁদপুর জেলা, পশ্চিমে মাদারীপুর জেলা। গড় তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস গড় বৃষ্টিপাত ২১০৫ মি মি। এটি মূলত চর এলাকা। শরীয়তপুর জেলা ৬ টি উপজেলা, ৭ টি থানা, ৫টি মিউনিসিপ্যালিটি, ৬৪টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৪৫টি ওয়ার্ড, ৯৩টি মহল্লা, ১২৩০টি গ্রাম এবং ৬০৭টি মৌজা নিয়ে গঠিত।

শরীয়তপুর জেলার বিখ্যাত খাবার:-
শরীয়তপুর-জেলার বিখ্যাত খাবারের নামবিবিখানা পিঠা।পরিবেশনে যেমন আভিজাত্য খেতেও তেমনি সুস্বাদ্য মুখরোচক। বাড়িতে অতিথির আগমন, বিয়ে, আড্ডা,অনুষ্ঠানসহ সব ধরনের আয়োজনে বিবিখানা পরিবেশন করা শরীয়তপুরের রীতি বলা চলে। প্রচলিত তথ্য অনুযায়ী, রাজা বিক্রমাদিত্যের সময় থেকে এই পিঠা চালু আছে। শুরুতে ফরিদপুর, শরীয়তপুর এবং ঢাকার বিক্রমপুর ও আশেপাশের অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তীতে এই পিঠা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রাচীন গ্রামবাংলায় নবান্ন উৎসবের আয়োজনে তৈরি বিভিন্ন পিঠার মধ্যে বিবিখানা অন্যতম। তবে বৃহত্তর শরীয়তপুর অঞ্চলে বিবিখানাতে তালের রস ব্যবহার করা হত বলে তালের পিঠা নামেও পরিচিত এই পিঠা। শীতের প্রথম খেজুরের রস বা গুড়ের সহচর্যে এই পিঠা মন জয় করে নিত হাজারো মানুষের।

শরীয়তপুর জেলার ইতিহাস:-
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে সিদ্ধান্ত অনুসারে গৃহীত হয় যে, মাদারীপুরের পূর্বাঞ্চল নিয়ে একটি নতুন মহকুমা গঠিত হবে। বিষয় নির্বাচনী কমিটির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক, ব্রিটিশ বিরোধী তথা ফরায়েজী আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়ত উল্লাহর নামানুসারে এর নামকরণ হয় শরীয়তপুর এবং এর সদর দপ্তরের জন্য পালং থানা অঞ্চলকে বেছে নেয়া হয়।
পলাশীর যুদ্ধে নবারের পরাজয়ের পর ১৭৬৫ সালে শরীয়তপুর ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সৃষ্ট প্রশাসনের আওতাধীন হয়। শরীয়তপুরসহ ফরিদপুরের দক্ষিণাঞ্চল নিয়ে ঢাকা নিয়াবত গঠন করা হয়েছিল। ঢাকা নিয়াবত একজন নায়েব সুবাদার বা নায়েব নাজিম ঢাকাকে কেন্দ্রস্থল হিসেবে গঠন করে শাসন পরিচালনা করেন। শরীয়তপুর পূর্বে বৃহত্তর বিক্রমপুর এর অংশ ছিল।

১৮৬৯ সালে প্রশাসনের সুবিধার্থে ইহাকে বাকেরগঞ্জ জেলার অংশ করা হয়। কিন্তু এ অঞ্চলের জনগণের আন্দোলনের মুখে ১৮৭৩ সালেই এ অঞ্চলকে মাদারীপুর মহকুমার অন্তর্গত করে ফরিদপুর জেলার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ভাইসরয় লর্ড কার্জনের সময় ১৯০৫ সালে বাংলাকে বিভক্ত করা হলে এ অঞ্চলের বিকাশ ত্বরান্বিত হয়। ১৯১০ থেকে ১৯৩৫ সালের দিকে এ অঞ্চলের বহু বিপ্লবী সক্রিয়ভাবে আন্দোলন করেছিল। তার মধ্যে হাজী শরিয়ত উল্লাহ অন্যতম।
আরও পড়ূনঃ

১ thought on “শরীয়তপুর জেলার বিখ্যাত খাবার”